আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ইতিহাস
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ মান্ধাতার আমলের থেকেই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আবাসভূমি।
১৭৭৭ সালে ব্রিটিশরা এই অঞ্চলে একটি নৃবেজ্ঞানী সমীক্ষা চালিয়েছিল। এই সমীক্ষা থেকে
জানা যায় যে, বহিরাগতদের আগমনের আগে কয়েক শতাব্দীকাল এই দুই দ্বীপপুঞ্জ নেগ্রিটো
ও মঙ্গোলয়েড জাতির অধিকারে ছিল।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ইতিহাসকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়ঃ
- ব্রিটিশ অধিকার প্রতিষ্ঠা
- ব্রিটিশ রাজত্ব
- জাপানি রাজত্ব
- স্বাধীনোত্তর যুগের ইতিহাস।
১৭৮৮ সালে দুই নৌ-আধিকারিকের সুপারিশক্রমে ১৭৮৯ সালে তদনীন্তন
গভর্নর-জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিশ পোর্ট কর্নওয়ালিশের কাছে চাটহাম দ্বীপে একটি
ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপন করেন। এই বছরই লেফটানেন্ট রেজিনল্ড ব্লেয়ার এই অঞ্চলে
একটি সমীক্ষার কাজ চালান। তাঁর নামানুসারে পোর্ট কর্নওয়ালিশের নাম হয় পোর্ট ব্লেয়ার।
১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার এখানে একটি কারাগার
স্থাপনের পরিকল্পনা করে। ১৮৫৮ সালে ভাইপার দ্বীপে তৈরি হয় একটি কারাগার, একটি গ্যালো ও
একটি জনবসতি। ২০০ জন বন্দীকে এই কারাগারে এনে রাখা হয়। এঁদের অধিকাংশই ছিলেন
ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিদ্রোহী সৈনিক। ১৯০৬ সালে পোর্ট ব্লেয়ারে সেলুলার
জেল তৈরি হলে আগের কারাগারটি পরিত্যক্ত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চলাকালে ১৯৪২ সালের ২১ মার্চ জাপানিরা
আন্দামান দখল করে নেয়। জাপানি সেনাবাহিনীর হাতে এই অঞ্চলের বহু নিরপরাধ মানুষও
নিহত হন। পরে জাপানিরা এই দ্বীপপুঞ্জ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন আজাদ
হিন্দ সরকারের হাতে তুলে দেয়। ১৯৪৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর সুভাষচন্দ্র পোর্ট
ব্লেয়ারে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চল
ব্রিটিশদের অধিকারমুক্ত ছিল। এই সময় আন্দামান খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে ওঠে।
১৯৪৫ সালের ৮ অক্টোবর জাপানি সেনাবাহিনীর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া কম্যান্ড পোর্ট
ব্লেয়ারে আত্মসমর্পণ করলে ব্রিটিশরা এই দ্বীপপুঞ্জের অধিকার আবার ফিরে পায়।
১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ একত্রে স্বাধীন
ভারতের হয়।
No comments:
Post a Comment