দিল্লি ভ্রমনের গল্প ২

বুধবার, ১৮ এপ্রিল, ২০০৭

মফিজের দিল্লি ভ্রমনের গল্প  

টানা 2 ঘন্টা ট্রেন জার্নিকরে দিল্লি যখন পৌছুলাম তখন রাত প্রায় 8 টা।পশ্চিম আকাশে তখনও গোধুলি।স্টেশনের কাছেই পাহাড়গনজের এক হোটেলে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিল্ল। পাশের এক রেস্টুরেন্টে আলু পরোটা ও সবজি দিয়ে ডিনার সেরে একটু হাটতে বেরুলাম দু বন্ধু। তবে বেশিদূর যেতে ইচ্ছে করেনি, একেতো রাত তার উপর আবার ক্লান্ত। রাতেই টু্যর অপরাটরের সাথে সিটি সাইট সিয়িং এর কন্টরাক্ট করলাম, 125 রুপি, এসি বাস।

undefinedগরমে এসি বাস খুবই আরামদায়ক, বিশেষ করে 40 - 45 ডিগ্রি সেলসিয়াসে। হাতে সময় কম থাকাতে প্যাকেজ টু্যরটাই বেছে নিয়েছিলাম যদিও ব্যক্তিগত ভাবে আমি এরকম প্যাকেট বন্দি বেড়ানো একদমই পছন্দ করি না।
মরিশাসের তৈরি এক প্যাকেট বেনসন কিনেছিলাম সে রাতে, মাগার ও ই বেনসনের মতো জঘন্য বেনসন আরো কোনোদিন দেখিনি।ওয়াক্... সকাল 7:30 টা টু্যর শুরু হোলো , মাঝে আরো কিছু হোটেল থেকে টু্যরিস্ট নিয়েছিল। কিছু ক্ষনের মধ্যে বাসটা একটা মালটি কালচারাল বাসে পরিনত হলো।আশ পাশ থেকে বিচিত্র সব ভাষা।

বাস প্রথম থামালো দিল্লি লাল কেল্লা। সেখানেও 10 মিনিটের জন্য ভারতীয় হয়ে গেলাম আমরা। শানেনজুল ভারতীয় দের জন্য টিকিট 5 রুপি আর ফরেনারদের জন্য ডলারে অনেক। লাল কেল্লার ভেতরে প্রায় 1 ঘন্টা ঘুরে দেখলাম।
এর পর সোজা কুতুব মিনার। ওখানে আমরা সবাই দূপুরের খাবার সারলাম। মজার একটা অভিগ্যতা হয়েছিল সেখানে। আমাদের টেবিলের পাশেই এক ক্যালকেশিয়ান পুরো পরিবার নিয়ে বসেছিল, সে এতো মজার একসেন্টে কথা বলছিল যে তা শুনে আমার বন্ধুও ওব্যাটার নকল কর শুরু করলো। ওব্যাটা না পারে সইতে না পারে কইতে।কুতব মিনার থেকে আমরা গেলাম রাজঘাটে, যেখানে মাহাত্মা গান্ধীর শেষকৃত্য করা হয়েছিল, অন্যরকম পবিত্র একটা পরিবেশ সেখানে।

রাজঘাট থেকে গেলাম ইন্ডিয়া গেট ও প্রেসিডেন্ট প্যালেস, ওখানে বেশ কিছু ক্ষন ছিলাম আমরা, বিকেল হয়ে গিয়েছিল তখন। ছবি টবি তুল্লাম সেখানে কিছু। সেখান থেকে কি একটা মন্দিরে গেলো সবাই, আমি অবশ্য যাইনি।মন্দির থেকে কনাট প্লেস, সস্তায় কেনা কাটার জন্য বিখ্যাত।এর পর ইন্দিরা গান্ধীর বাড়ি, দিল্লি জামে মসজিদ ঘুরে সেই পাহাড়গনজ, যেখান থেকে শুরু করেছিলাম যাত্রা।আমরা সকালেই হোটেল থেকে চেক আউট করেছিলাম।

এর পর শুরুহোলো দিল্লি সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে আলিগড়ের টিকিট কাটার প্রানান্ত চেষ্টা তখন। 1 ঘন্টা যুদ্ধ শেষ করে ফিরে দেখি আমার বন্ধু এক স্পেনিয়ার্ডের সাথে মহা খাতিরে গল্প করছে। দেখে মেজাজটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমরা তাকে দিলাম গোলড লিফ তার বদলে সে দিল কুট কুটে স্বাদের স্পেনিশ সিগারেট। শালা দেখি মহা চালাক। যখন বল্লাম দিল্লি হোলো বাটপারে ভর্তি, পকেটকাটা যেতে পারে তখন দেখি সে ট্রাউজার খুলে দেখায় এমন জায়গায় টাকা-পাসপোর্ট যে ওগুলো নিতে হলে বিশেষ জায়গায় হাত বুলিয়ে নিতে হবে।চিড়িয়া একটা ছিল ব্যাটা।
ট্রেনে উঠে দেখি টোটাল ফিল আপ। দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত নেই। খুব কষ্ট হয়েছিল দিল্লি থেকে আলিগড় যেতে সে বার, আর দেখলাম আমরা ছাড়া আর কেউ টিকিট কাটেনি। রাত 10 টার দিকে আলিগড় পৌছুলাম।

টানা 2 ঘন্টা ট্রেন জার্নিকরে দিল্লি যখন পৌছুলাম তখন রাত প্রায় 8 টা।পশ্চিম আকাশে তখনও গোধুলি।স্টেশনের কাছেই পাহাড়গনজের এক হোটেলে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিল্ল। পাশের এক রেস্টুরেন্টে আলু পরোটা ও সবজি দিয়ে ডিনার সেরে একটু হাটতে বেরুলাম দু বন্ধু। তবে বেশিদূর যেতে ইচ্ছে করেনি, একেতো রাত তার উপর আবার ক্লান্ত। রাতেই টু্যর অপরাটরের সাথে সিটি সাইট সিয়িং এর কন্টরাক্ট করলাম, 125 রুপি, এসি বাস।



-মাহবুব আবদুল্লাহ
http://www.mahbub-sumon.com



No comments: