নৈনিতাল
স্থানের নামঃ নৈনিতাল।
মুখ্য আকর্ষনঃ হ্রদ,
পাহাড়, মন্দির।
নয়নাদেবী মন্দির |
উচ্চতায় অবস্থিত। শহরটি পর্বতবেষ্টিত নাশপাতি আকারের একটি হ্রদের উপত্যকাতে অবস্থিত। এখানকার পর্বতগুলির চূড়া থেকে দৃশ্যমান ভূ-দৃশ্যাবলি অসাধারণ। দক্ষিণে রয়েছে বিস্তীর্ণ সবুজ সমভূমি আর উত্তরে তাকালে দেখা যাবে বরফাবৃত হিমালয়ের কেন্দ্রীয় পর্বতগুলির সারি (নন্দা দেবী, ত্রিশূল এবং নন্দা কোট যাদের মধ্যে অন্যতম)। মুন্সী প্রেমচাঁদ, রাডিয়ার্ড কিপলিং এবং জিম করবেট তাদের রচনাতে নৈনিতালের উল্লেখ করেছেন। জিম করবেট স্বয়ং এখানে বাস করতেন। অমিতাভ বচ্চন এখানকার শেরউড কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভিক্টোরীয় যুগে এখানে মূলত ইংরেজ প্রশাসক ও কর্মচারীরা বাস করতেন। এখানকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাসভবনের স্থাপত্যে এর ছাপ আজও রয়ে গেছে। কিংবদন্তি, এখানে শিব ও সতী একত্রে বাস করতেন। এখানে সতীর চোখ পরেছিল। সেই জন্য এর নাম নৈনি। তাল মানে লেক। লেকের পারেই নৈনিদেবীর একটি মন্দির আছে। নৈনিতালে বর্তমানে প্রায় ৩৯ হাজার লোকের বাস।
Kathgodam RS |
ট্রেনঃ হাওড়া থেকে সরাসরি ট্রেনের মধ্যে প্রতিদিন পাবেন হাওড়া-কাঠগোদাম বাঘ এক্সঃ। নৈনিতাল আসার ও যাওয়ার ট্রেনের লিস্ট জন্য click here.
বাসেঃ রামনগর থেকে নৈনিতালের দূরত্ব মাত্র ৬৪ কিমি। এক থেকে দেড় ঘণ্টা অন্তর কালাধুঙ্গি হয়ে নৈনিতাল যাবার বাস ছাড়ছে। সময় লাগে সাড়ে ৩ ঘান্টা।
কোথায় থাকবেনঃ
কুমায়ুন হল একটি জনপ্রিয় হিলষ্টেশন। তাই এখানে দেড়শ
এর অধিক নানা মানের ও দামের হোটেল আছে। হোটেলের তালিকার জন্য click here.
কী দেখবেনঃ
নৈনিতালের আবহাওয়া সারাবছর মনোরম থাকে। নৈনিলেকের
বুকে ইচ্ছা মতো ভেসে বেড়াতে পারেন। নৈনিতাল এবং তার কাছা কাছি এলাকা দর্শন করতে
আপনার তিন দিন সময় লাগবে।
প্রথম দিনঃ-
নৈনিতালে দর্শন করুনঃ
- নয়নাদেবী মন্দিরঃ দেবীর নাম থেকেই নৈনিতালের নাম।
- গুরু দোয়ার।
- রোপ অয়ে চড়ে স্নো ভিউ পয়েন্ট (২২৭০ মিটার)। এখান থেকে নন্দা দেবী (৭৮১৬ মি) সহ অনেক গুলো বরফে ডাকা শৃঙ্গ দেখা যায়।
- নয়না পিক বা চাইনা পিক (নৈনিতালের উচ্চতম স্থান ২৬১০ মি)।
- হাই অলটিচিউডজ।
- ডোরেথিজ মিট (২২৭০ মি)।
- কিলরুরি (২৫২৮ মি)।
- হনুমান গড়ি।
- ষ্টেট আবজার্ভেটরি।
- ল্যান্ডস এন্ড (২১১৮ মি)।
- সেন্ট জন্স চার্চ।
- গাধান কুনকিইয়প নিংগম্পা।
দ্বতীয় দিনঃ-
নৈনিতালে দর্শন করুনঃ
১. সাত তালঃ এটি ২৩ কিমি দূরে অবস্থিত। উচ্চতা ১৩৭০ মিটার। আসলে অনেক গুলো সরোবর নিয়ে
গঠিত।
সেগুলো হলঃ
- নল-দয়ন্তি
- পান্না
- গরুড়
- রাম
- লক্ষণ
- সীতা সরোবর।
এখানে বোটিং এর সব রকম ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও
বেড়িয়ে নিতে পারেন মার্কিন মিশনারি স্ট্যানলি জোন্স এর আশ্রম। এখানে পর্জটন
বিভাগের ডিলাক্স ও সুপার ডিলাক্স কটেজ আছে। ফোনঃ ০৫৯৪২-২৪৭০০৫।
২. ভীম তালঃ এটি নৈনিতাল থেকে ২২ কিমি দূরে অবস্থিত। এই সরোবরের
মাঝে দ্বীপ আছে। এখানে বোটিংসহ অন্যান্য ওয়াটার স্পোটস এর আসর বসে। এখানে সুন্দর
প্রাকৃতিক পরিবেশে এক রাত থাকতে পারেন। পর্জটন বিভাগের হোটেল (০৫৯৪২-২৪৭০৫৫)।
৩. নৌকচিয়া তালঃ এই সরোবরটি আকারে নয় কোন বিশিষ্ট। দৈঘ্য প্রায় ১ কিমি ও প্রস্থে প্রায় ৭০০ মিটার।
সুগভীর এই সরোবরে বোটিং, প্যাঁডেলিং ও ইয়টিং এর সব রকম ব্যবস্থা আছে। থাকার জন্য
ট্যুরিস্ট রেস্ট হাউস (০৫৯৪২-২৪৭১২৮)।
৪. খুর পাতালঃ নৈনিতাল থেকে এই সরবরের দূরত্ব ৫ কিমি। এটি মাছ
ধরার জন্য বিখ্যাত।
প্রায় সারাদিনের সফরে গাড়িভাড়া করে এই সরবর গুলি
বেড়িয়ে নিন।
ত্বতীয় দিনঃ-
সারা দিনের চুক্তিতে গাড়িতে বেড়াবেন মুক্তেশ্বর, রামগড়
ও ভাওয়ালি।
১. মুক্তেশ্বরঃ নৈনিতাল থেকে ২২৮৬ মিটার উচ্চতায় মুক্তেশ্বর যেন
এক টুকরো স্বর্গ। আপেল, পিচ, পাম ও অ্যাপ্রিকট বাগিচায় ঘেরা। মুক্তেশ্বর থেকে
হিমালয়ের একটা বড় অংশ খুব সুন্দর দেখা যায়। অগুন্তি তুষার শৃঙ্গের ভিড়ে ও বেশ
স্পষ্ট লাগে নন্দা দেবী (৭৮১৬ মিটার), নন্দ কোট (৬৮৬১ মিটার), নন্দ খুন্টি (৬৩৯০
মিটার), ত্রিশূল ও পঞ্চচুল্লি কে। মুক্তেশ্বর অপর বিস্ময় চৌলি-কি-জালি নামে খাড়া
পাহাড়। ২৩১২ মিটার উচ্চতায় মুক্তেশ্বর মহাদেব মন্দির। এখানে পি ডবলু ডি গেস্ট
হাউসটিও দর্শনিয়। জিম করবেট একটি মানুষ খেকো বাঘকে মারার জন্য এখানে থেকে ছিলেন।
এখানে থাকার জন্য পাবেন সরকারি ট্যুরিষ্ট বাংলো (০৫৯৪২-২৮৬২৬৩)।
২. ভাওয়ালিঃ নৈনিতাল থেকে ১১ কিমি দূরে অবস্থিত।
উচ্চতা ১৭০৬ মিটার। এখানকার নৈসর্গিক দৃশ্য ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ অতুলনিয়।
এখানকার মুখ্য আকর্ষনঃ
- খোঁড়াখালে গোলুদেবতার মন্দির
- সৈনিক স্কুল
- জিওলিকেটের ফল বাগিচা।
থাকার জন্য কুমায়ুন মণ্ডলের হোটেল (০৫৯৪২২২০০৬২)।
প্রয়োজনীয় ফোন নাম্বারঃ
বিডি পাণ্ডে হাস্পিতাল হসপিটাল (মাল্লতাল)
০৫৯৪২-২৩৫০১২, রোড অয়েজ বাস স্ট্যান্ড – ২৩৫৫১৮, পর্বত ট্যুর – ২৩৫৬৫৬।
Kathgodam to Nainital Map
View Larger Map
No comments:
Post a Comment