সহজে ওজন কমাবে যে ১৪ টি খাবার
ওজন কমানোর জন্য বেশিরভাগ মানুষ চিন্তিত থাকেন। কী করলে ওজন কমবে, কীভাবে চললে একটু কম মোটা দেখাবে, কী কী না খেলে ওজন কমবে আরও কত কি! ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনেক কাজ করে থাকেন ওজন কমানোর জন্য। অনেক বিধি নিষেধ মেনে চলেন। কিন্তু এত কিছুর পরও ওজন কমে না। যেন পিছুই ছাড়তে চায় না বাড়তি ওজন। এদিকে বিধি নিষেধ মানতে মানতে জীবন অস্থির। মজার ব্যাপার কি জানেন, আপনি আপনার খাবার তালিকায় কিছু খাদ্য যোগ করে অনায়াসেই কমিয়ে নিতে পারেন ওজন। অবাক হচ্ছেন? অবাক হলেও সত্য যে কিছু খাবার খেয়ে আপনি ওজন কমাতে পারেন সহজেই। আজকে আপনাদের জন্য রইল এরকমই একটি খাদ্যের তালিকা।
১. কাঠবাদাম
কাঠবাদাম স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো একটি
খাদ্য। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল আছে তা পুরো দিন শরীরে এনার্জি
সরবরাহ করে। কাঠবাদামের ফাইবার ক্ষুধা কমায়। সকাল শুরু করুন একমুঠো কাঠবাদাম দিয়ে।
ডাক্তাররা শরীরের সুস্থতার পাশাপাশি দেহের চর্বি নিয়ন্ত্রণে কাঠবাদাম খাওয়ার
পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে লবণাক্ত কাঠবাদাম এড়িয়ে চলুন।
২. মুগ ডাল
মুগ ডালে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি ও ই আছে।
এছাড়াও রয়েছে ক্যালশিয়াম, আয়রন এবং পট্যাশিয়াম। প্রোটিন এবং
ফাইবার রিচ খাবার হওয়ার দরুণ এক বাটি মুগ ডাল খেলে পেট অনেকক্ষণ ভর্তি থাকে। তবে
পরিমাণ মেপে খাওয়াই ভালো।
৩. ডিমের সাদা অংশ
অনেকেই মনে করেন ডিম খেলে ওজন বাড়ে। কথাটি
সম্পূর্ণ ভুল। তবে ওজন কমাতে চাইলে ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলাই ভালো। সকালে একটি/ দুটি
ডিমের সাদা অংশ খেলে তা অনেকটা সময় ধরে পেটে থাকে এবং কম ক্ষুধার উদ্রেক করে। এতে
অন্যান্য খাওয়া কম হয়। ডিম প্রোটিনের খুব ভালো একটি উৎস। এতে করে শরীরের জন্যও বেশ
ভালো। ডায়েট যারা করেন তারা একটি ডিম রাখুন সকালের নাস্তায়। পুরো দিনটি শরীরে কাজ
করার ক্ষমতা পাবেন। পাশাপাশি ওজন কমাতে পারবেন।
৪. আখরোট
খিদে পেলে
চার-পাঁচটা আখরোট খেয়ে নিন। পেট তো ভরবেই সেই সঙ্গে আপনার শরীর পাবে প্রচুর
পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অন্যান্য ড্রাই ফ্রুটের তুলনায় আখরোটে কোলেস্টেরলের
পরিমাণও কম। তবে একটা কথা খেয়াল রাখবেন। আখরোটে অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালোরি রয়েছে, ফলে আখরোট খেয়ে ওজন কমে বলে সারাদিন ধরেই আখরোট
খেলেন, তাহলে হিতে বিপরীতই হবে।
৫. আপেল
আপেল সম্পর্কে একটি প্রচলিত কথা হল ‘দিনে মাত্র একটি আপেল খেলে
ডাক্তারের প্রয়োজন হয় না’। কিন্তু আপনি জানেন কি, আপেল ওজন কমাতে অনেক বেশি কার্যকরী একটি খাবার? একটি
আপেলে ৪-৫ গ্রাম ফাইবার থাকে। তা ক্ষুধার উদ্রেক কমায়। এবং শরীরে জমে থাকা ফ্যাট
কাটতে সাহায্য করে। যখন হুটহাট ক্ষুধা লাগে তখন অনেকেই অস্বাস্থ্যকর হাবিজাবি
খাবার খান যা শরীরের জন্য ভালো না এবং ওজনও বাড়িয়ে তোলে। সুতরাং মুটিয়ে যাওয়া দূর
করতে একটি আপেল রাখুন সাথে।
৬. ফুলকপি
এই নামটা পড়ে
একটু অবাক হচ্ছেন কি! না হবেন না, কারণ সত্যিই
ফুলকপি ওজন কমাতে সাহায্য করে। লো ক্যালোরি খাবার হওয়ার পাশাপাশি এতে ফাইবারও
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। তাই পেট অনেকক্ষণ ভর্তি থাকে। তা ছাড়াও এতে ইন্ডোল, গ্লুকোসাইনোলেট এবং থায়োসাইনেট রয়েছে যা শরীর থেকে
টক্সিন বের করতেও সাহায্য করে।
৭. দারুচিনি
মাঝে মাঝে আমরা কিছু খাবারে সামান্য চিনি দিয়ে
থাকি খাবারটিকে হালকা মিষ্টি ও সুস্বাদু করার জন্য। পরবর্তীতে চিনির বদলে দারুচিনি
গুঁড়ো দিয়ে দিন। খাবারে ভিন্ন স্বাদ যোগ করার পাশাপাশি এটা ওজন কমাতে সাহায্য
করবে।
৮. রসুন
যেকোনো খাবারে
রসুনের ছোঁয়া বদলে দেয় তার পুরো স্বাদ, কিন্তু জানেন
কি এই রসুন ওজন কমাতেও একইভাবে সাহায্য করে! রসুনে মজুত অ্যালিসিন উচ্চ কোলেস্টেরল
ও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ব্লাড শুগারও কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও
অ্যাপেটাইট কনট্রোল করতেও রসুন উপযোগী। ফলে ওজন খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৯. আমন্ড
আমন্ডও ওজন
কমাতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে জলে ২-৩টে আমন্ড ভিজিয়ে রাখবেন। সকালে
ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ভিজিয়ে রাখা আমন্ড খেয়ে নেবেন। সারাদিনে খিদে পেলেও চিপসের
পরিবর্তে চোখ বন্ধ করে আমন্ড বেছে নিতে পারেন। তবে ওই আখরোটের মতোই একসঙ্গে বেশি
পরিমাণে খাবেন না। তাতে ফল উল্টো হবে।
১০. টোম্যাটো
টোম্যাটো খেলে
শরীরে কোলেসিসটোকিনিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যা স্টম্যাক এবং ইনটেস্টাইনের
মধ্যে যে ভাল্ভ রয়েছে তা টাইট করে দেয়। ফলে পেট ভর্তি লাগে। তাই অনায়াসেই ওভারইটিং
এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। আর প্রয়োজনের অতিরিক্ত না খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনাও থাকে
না।
১১. ক্যাপসিকাম
ক্যাপসিকামে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি।
এই ভিটামিন সি খুব সহজে ও খুব দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করে। লাল, হলুদ কিংবা সবুজ যে কোন ধরণের
ক্যাপসিকাম খেতে পারেন রান্নায় ব্যবহার করে। সব থেলে ভালো উপায় হচ্ছে সালাদে
ক্যাপসিকাম খাওয়া। ওজন কমতে বেশ সাহায্য করবে।
১২. অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েলে
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে, যা পেট ভর্তিভাব তৈরি করে। ফলে যখন
তখন খিদে পাওয়া প্রবণতাও কমে যায়। এছাড়াও এতে পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে
যা শরীরে মজুত ফ্রি র্যাডিরলস্ দূর করতে সাহায্য করে। সূত্র: ওয়েবসাইট
১৩. ওটস
ওটস আমরা সবাই চিনি। কিন্তু খেতে খুব বেশি
সুস্বাদু নয় তাই অনেকেই এড়িয়ে চলি। সকালের নাস্তায় এক বাটি ওটস খেলে ওজন খুব দ্রুত
কমে যায়। ওটস হচ্ছে ওজন কমানোর খুব ভালো একটি খাদ্য উপাদান। ওটসে রয়েছে প্রচুর
ফাইবার। ওজন সমস্যায় ভোগা সকল রোগীকে ডাক্তাররা ওটস খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
১৪. লেবু-মধুর পানীয়
মধু ও লেবু আসলেই যে কার্যকরী, তা পরীক্ষিত এবং সারা বিশ্বে
সমাদৃত ও স্বীকৃত। ওজন কমাতে দুটি প্রাকৃতিক উপাদান লেবু ও মধুর সম্পর্কে অনেকেই
জানেন। ওজন কমানো ছাড়াও লেবু ও মধুর অনেক গুণাগুণ আছে। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের
করে। শরীরের ভেতরের নালীগুলোর সব ময়লা বের করে দেয়। মেটাবলিজম/হজম শক্তি বাড়ায়,
ফলে ওজন কমে। ঠাণ্ডা লাগলে লেবু ও মধুর কফ বের করতে সাহায্য করে এবং
ঠাণ্ডা লাগলে গলাব্যথা করলেও এটি উপকারী । কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
পড়তে
ভুলবেন না
- লেবুর ১৫ রকম উপকারিতা
- মধুর ১৭ রকম উপকারিতা
- জলপাইয়ের ৭ টি উপকারিতা
- যে ৮টি মশলা ওজন কমায়
- বেশি খেয়ে ওজন কমান!
- দৈনিক মাত্র ১০ মিনিট চুম্বন কমাবে অতিরিক্ত ওজন!
- পেটের মেদ কমানোর ৬টি ধাপ
- লেবু-মধুর সরবত খাওয়ার সাবধানতা
- ব্যায়াম ছাড়াই ৬টি প্রাকৃতিক উপায়ে কমিয়ে ফেলুন বাড়তি ওজন!
- ওজন কমাতে হলে ৫ ধরনের পানীয়
- মেদ কমাতে পেটের সামনের পেশীমাসলের রেগুলার ব্যায়াম
- ফিট থাকতে কি খাব, কখন খাব
- দ্রুত ঝরে যাবে বাড়তি মেদ, ৪টি কাজ করুন সন্ধ্যা ও রাতে !
- কম খেয়ে কি ওজন কমান যায়
- বাড়তি ওজন কমাবেন কি ভাবে
- সপ্তাহে ৭ থেকে ১০ পাউন্ড ওজন কমান
No comments:
Post a Comment